[ শিল্প বাণিজ্য ] 14/12/2017 |
|
|
|
কাঁকড়া রফতানিতে সম্ভাবনার হাতছানি |
 |
বছরে আয় ৪০০ কোটি টাকা |
অবহেলিত কাঁকড়া খুলে দিতে পারে দেশের অর্থনীতিতে সম্ভাবনার এক নতুন দ্বার। কারণ বিদেশে কাঁকড়ার চাহিদা এখন আকাশছোঁয়া। সঠিক পরিকল্পনা ও সরকারের সহায়তা পেলে এ প্রাণী বদলে দিতে পারে লাখো মানুষের ভাগ্য। কাঁকড়া রফতানি করে এখন প্রতিবছর গড়ে আয় হচ্ছে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। দিন দিন যে হারে চাহিদা বাড়ছে তাতে সাদা সোনা হিসেবে পরিচিত চিংড়িকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে এ জলজ সম্পদ। এমনটিই মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। কাঁকড়া হচ্ছে চিংড়ির মতোই সুস্বাদু। দেশের বাজারে এর খুব একটা চাহিদা না থাকলেও বিদেশের বাজারে চাহিদা ব্যাপক। যার ফলে দেশে আহরিত কাঁকড়ার বেশিরভাগই রফতানি হয়। এশিয়ার বিভিন্ন দেশে কাঁকড়া জনপ্রিয় খাবারের তালিকায় অন্যতম। বাংলাদেশ এর ব্যতিক্রম। দেশে কাঁকড়া খাওয়ার প্রচলন তেমন নেই বললেই চলে। ঢাকা শহরের দুই একটি হাইপ্রোফাইল বুফে রেস্টুরেন্টে কাঁকড়া পাওয়া গেলেও, জনসাধারণ কাঁকড়াকে খাবারের তালিকায় দেখলে ইতস্তত বোধ করেন। রাজধানী তুরাগের নলভোগ এলাকায় প্রায় শতাধিক কাঁকড়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন বিভিন্ন গ্রেডে কাঁকড়া বাছাই করে। বাছাইকৃত কাঁকড়া প্লাস্টিকের ঝুড়িতে আলাদা করে প্যাকিং করা হয় বিদেশে রফতানি করার জন্য। এখানে স্ত্রী ও পুরুষ কাঁকড়া আলাদাভাবে বাছাই করা হয়। তবে পুরুষ কাঁকড়া থেকে স্ত্রী কাঁকড়ার দাম বেশি। গ্রেডের ওপর নির্ভর করে দাম নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু এসব রফতানিকারকরা প্রতিনিয়ত নানারকম ভোগান্তির শিকার হন। সরকারকে রাজস্ব দেয়ার পরও হয়রানির শিকার হন তারা। রফতানির ছাড়পত্র নিতে গিয়ে গুনতে হচ্ছে উৎকোচ। আর সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে কাঁকড়া মৎস্যসম্পদ হলেও এটি রফতানির ক্ষেত্রে ছাড়পত্র দেয় বন বিভাগ। জানা গেছে, মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত এ চার মাস হচ্ছে কাঁকড়ার ভরা মৌসুম। ওই সময়ে চাষি পর্যায়ে প্রতি কেজি কাঁকড়া প্রকারভেদে বিক্রি হয় ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত। আর অন্য সময় প্রতি কেজি বিক্রি হয় প্রকারভেদে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত। উপকূলীয় জেলা খুলনার দাকোপ, পাইকগাছা, কয়রা, সাতক্ষীরার শ্যামনগর, কালীগঞ্জ, আশাশুনি, বাগেরহাট সদর, মোরেলগঞ্জ, কক্সবাজারের মহেশখালী, টেকনাফ, চকোরিয়া, চট্টগ্রামের আনোয়ারা, বাঁশখালী ও নোয়াখালী থেকে কাঁকড়া আসে। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, রাজধানীর তুরাগে ৬০ থেকে ৭০ জন ব্যবসায়ী আছেন যারা কাঁকড়া রফতানি করেন। এই এলাকার খালপাড়েই বসে কাঁকড়ার আড়ত। মূলত এখান থেকে কাঁকড়া প্যাকেজিং হয়। বিদেশে কাঁকড়ার প্রধান বাজার হচ্ছে চীন, থাইল্যান্ড, তাইওয়ান, হংকং, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, জাপান, কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশে। এর বাইরে আরও কয়েকটি দেশে কাঁকড়া রফতানির কথাবার্তা চলছে। ক্ষুদ্র রফতানিকারক অভি এন্টার প্রাইজের বাপ্পা জানান, ভরা মৌসুমে প্রতি মাসে গড়ে ২২০ থেকে ২৫০ টন কাঁকড়া রফতানি করেন। আর মৌসুম ছাড়া অন্য সময়ে প্রতি মাসে গড়ে ৫০ থেকে ৬০ টন রফতানি করা হয়। কিন্তু রফতানিতে সরকারি পর্যায়ে কোনো রকম সহযোগিতা নেই বলে হতাশা প্রকাশ করেন তিনি। কাঁকড়া রফতানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ লাইভ অ্যান্ড চিল্ড ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি গাজী আবুল হাশেম যুগান্তরকে বলেন, তাদের সংগঠনের অধীনে মোট ১৫৩ জন সদস্য রয়েছেন। বর্তমানে কাঁকড়া রফতানিতে সক্রিয় রয়েছে ৫০ থেকে ৫২ জন্য সদস্য। সবাই মিলে প্রতিদিন সাত থেকে আট টন কাঁকড়া রফতানি করি। চাহিদা আরও বেশি থাকলেও নানা সমস্যার কারণে রফতানির পরিমাণ বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। তবে সরকারের সহযোগিতা পেলে এ জলজ প্রাণী রফতানি করে আরও বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব বলে তিনি জানান। |
News Source
|
|
|
|
|
|
|
|
Today's Other News
|
Related Stories |
|
|
 |
|